দারুণ সব কৌশলে সমাস চেনার সেরা উপায়!

 

দারুণ সব কৌশলে সমাস চেনার সেরা উপায়!

সংক্ষিপ্ত ও পরীক্ষাসম্মত কৌশল: কিভাবে সমাস চিনবেন”
বাংলা ব্যাকরণ মানেই অনেকের কাছে একটি দুর্বোধ্য বিষয়, আর এর মধ্যে সমাস তো যেন এক ধাঁধা। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থী—বিসিএস, পিএসসি, প্রাইমারি, এনটিআরসিএ, কিংবাবিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা—সকলের জন্যই সমাস একটি অপরিহার্য অধ্যায়। অথচ, সামান্য কৌশলের অভাবে আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটিকে এড়িয়ে চলি। এই আর্টিকেলে আমরা সমাসের জটিল জট ছাড়িয়ে এর মূল রহস্য উদঘাটন করব। কীভাবে সহজে সমাস চেনা যায়, এর প্রকারভেদ, এবং প্রতিটি সমাসের চেনার কার্যকরী উপায়গুলো নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এখানে এমন কিছু কৌশল তুলে ধরা হয়েছে যা আপনাকে সমাসের প্রতিভয় দূর করতে সাহায্য করবে এবং খুব অল্প সময়েই আপনি সমাসের সঠিক উত্তর বের করতে পারবেন। এটি কেবল একটি সাধারণ লেখাই নয়, বরং বাংলা ব্যাকরণের এই অংশটির ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন।


সমাস কী?

সমাস শব্দের অর্থ হলো সংক্ষেপ, মিলন বা একপদীকরণ। যখন দুই বা তার বেশি পদ মিলে একটি নতুন পদ তৈরি করে, তখন তাকে সমাস বলে। এই নতুন পদটি একটি মাত্র অর্থ প্রকাশ করে। এর ফলে ভাষা আরও সংক্ষিপ্ত, সুন্দর এবং শ্রুতিমধুর হয়। যেমন, 'সিংহাসন' শব্দটি গঠিত হয়েছে 'সিংহ চিহ্নিত আসন' এই তিনটি পদ থেকে। এখানে সমাসের মাধ্যমে বাক্যটি সংক্ষিপ্ত হয়েছে।


সমাসের প্রকারভেদ এবং সহজ চেনার উপায়

সাধারণত সমাসছয় প্রকার। তবে কিছু ব্যাকরণবিদ এদেরকে আরও কয়েকটি উপবিভাগে ভাগ করেছেন। এই প্রবন্ধে আমরা প্রধান ছয় প্রকার সমাসের মূল বৈশিষ্ট্য এবং সেগুলো চেনার সহজ কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।

১. দ্বন্দ্বসমাস

দ্বন্দ্ব সমাস চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এর উভয় পদই প্রধান। যখন দুই বা তার বেশি শব্দকে 'ও', 'এবং', 'বা', 'অথবা' ইত্যাদি অব্যয় দিয়ে যুক্ত করা যায়, তখন তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

  • যেমন:
    • মা-বাবা = মা ও বাবা।
    • ভাই-বোন = ভাই ও বোন।
    • ভালো-মন্দ = ভালো ও মন্দ।

এই সমাসে হাইফেন (-) ব্যবহার করা হয়, যা উভয় পদের সমান গুরুত্ব নির্দেশ করে।

২. দ্বিগুসমাস

দ্বিগু সমাস চেনার মূল ট্রিক হলো, এর প্রথম পদটি সর্বদা একটি সংখ্যাবাচক শব্দ হবে এবং সমাসবদ্ধ পদটি একটি সমষ্টি বা সমাহারকে বোঝাবে।

  • যেমন:
    • পঞ্চনদ = পঞ্চ (পাঁচ) নদের সমাহার।
    • শতাব্দী = শত (একশো) অব্দের সমাহার।
    • ত্রিভুজ = ত্রি (তিন) ভুজের সমাহার।

যেখানে একটি সংখ্যা দিয়ে কোনো একটি সমষ্টিকে বোঝানো হয়, সেখানেই দ্বিগু সমাস।

৩. তৎপুরুষ সমাস

তৎপুরুষ সমাস হলো বিভক্তি-নির্ভর সমাস। এই সমাস চেনার প্রধান কৌশল হলো, ব্যাসবাক্য করতে গেলে কোনো না কোনো কারকের বিভক্তি (যেমন: কে, রে, দ্বারা, জন্য, থেকে, এর, তে ইত্যাদি) যুক্ত হয়। সমাসবদ্ধ পদে এই বিভক্তি লুপ্ত হয়ে যায়।

  • যেমন:
    • রাজপুত্র = রাজার পুত্র (এখানে 'র' বিভক্তি লুপ্ত হয়েছে)।
    • শিক্ষাগুরু = শিক্ষাকে গুরু (এখানে 'কে' বিভক্তি লুপ্ত হয়েছে)।
    • দেশপ্রেম = দেশের প্রতি প্রেম (এখানে 'এর' বিভক্তি লুপ্ত হয়েছে)।

কারক বুঝে তৎপুরুষ সমাস চেনা খুব সহজ।

৪. কর্মধারয় সমাস

কর্মধারয় সমাসে একটি পদের সাথে অন্য পদের বিশেষণ বা বিশেষ্য সম্পর্ক থাকে। এই সমাসে সাধারণত একটি পদ অন্য পদের গুণ, বৈশিষ্ট্য বা অবস্থা বর্ণনা করে।

  • যেমন:
    • নীলপদ্ম = নীল যে পদ্ম।
    • মহানবি = মহান যে নবি।
    • কাজলকালো = কাজলের মতো কালো।

এই সমাসে পূর্বপদটি সাধারণত বিশেষণ হিসেবে কাজ করে এবং পরপদটি বিশেষ্য হিসেবে থাকে।

কর্মধারয় সমাস চেনার ট্রিক:

🪄 বিশেষণ + বিশেষ্য = কর্মধারয়
🪄 রঙ, গুণ, অবস্থা, ধর্ম বোঝালে খেয়াল করুন – এটি কর্মধারয় হতে পারে।

🔷 উদাহরণসমূহ:

উদাহরণ

ব্যাসবাক্য

ব্যাখ্যা

সুন্দরবন

সুন্দর বন

“সুন্দর” = বিশেষণ, “বন” = বিশেষ্য

স্নেহময়ী

স্নেহে পূর্ণ নারী

স্নেহময়ী = যে নারী স্নেহময়

গরিবছেলে

গরিব ছেলে

“গরিব” = বিশেষণ, “ছেলে” = বিশেষ্য

শুভেচ্ছাবাণী

শুভ ইচ্ছার বাণী

“শুভেচ্ছা” বিশেষণরূপে এসেছে

৫. বহুব্রীহি সমাস

বহুব্রীহি সমাসকে বলা হয় 'ভিন্ন অর্থের সমাস'। এই সমাসে সমাসবদ্ধ পদের কোনো অর্থই প্রধান হয় না, বরং এটি একটি ভিন্ন বা তৃতীয় কোনো অর্থকে নির্দেশ করে।

  • যেমন:
    • দশভুজা = দশটি ভুজ আছে যার (এখানে দশ বা ভুজ কোনোটিই প্রধান নয়, বরং দুর্গা দেবীকে বোঝানো হচ্ছে)।
    • নীলকণ্ঠ = নীল কণ্ঠ যার (এখানে নীল বা কণ্ঠ কোনোটিই প্রধান নয়, বরং শিবকে বোঝানো হচ্ছে)।
    • পরাশ্রয়ী = পরের উপর আশ্রয় করে যে (এখানে ভিন্ন একটি গুণ বা অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে)।

এই সমাসের ব্যাসবাক্যে প্রায়শই 'যার', 'যে', 'যিনি' ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।

৬. অব্যয়ীভাব সমাস

অব্যয়ীভাব সমাসে পূর্বপদটি অব্যয় হয় এবং এর অর্থই প্রধান হয়। এটি সাধারণত সাদৃশ্য, সামীপ্য (নিকটবর্তী), অভাব, পর্যন্ত, অতিক্রম, পশ্চাৎ (পেছনে) ইত্যাদি বোঝায়।

  • যেমন:
    • উপকণ্ঠ = কণ্ঠের সামীপ্য (এখানে 'উপ' অব্যয়টি নিকটবর্তী অর্থ প্রকাশ করছে)।
    • আজীবন = জীবন পর্যন্ত (এখানে 'আ' অব্যয়টি পর্যন্ত অর্থ প্রকাশ করছে)।
    • প্রতিদিন = দিন দিন (এখানে 'প্রতি' অব্যয়টি পুনরাবৃত্তি বোঝাচ্ছে)।

📝 অতিরিক্ত পরামর্শ:

সমাস

ব্যাসবাক্য

শনাক্তের চাবিকাঠি

উদাহরণ

তৎপুরুষ

কে,রে,জন্য,দ্বারা,দিয়ে,হতে

থেকে,চেয়ে,র, এর, এ,য,তে

কারক বা বিভক্তি থাকে

রামায়ণ = রামের আয়ণ

কর্মধারয়

যে—সে, যিনি—তিনি,যেমন-তেমন, যা—তা ইত্যাদি

বিশেষণ + বিশেষ্য

নীলকমল = নীল রঙের পদ্ম

বহুব্রীহি

 যে,যিনি

নাম নয়, গুণ বোঝায়

দশভুজা = যার দশটি হাত

দ্বিগু

সমাহার

সংখ্যা + বিশেষ্য

চতুর্বেদ = চার বেদ

দ্বন্দ্ব

( ও, এবং, অথবা, বা)

উভয় পদ প্রধান  (সমান গুরুত্ব)

রামলক্ষ্মণ = রাম ও লক্ষ্মণ

 

গুরুত্বপূর্ণ MCQ প্রশ্নোত্তর

১. ‘রাজপুত্র’ কোন সমাস?

ক) দ্বন্দ্ব সমাস খ) তৎপুরুষ সমাস গ) বহুব্রীহি সমাস ঘ) দ্বিগু সমাস

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ সমাস

২. ‘অগ্নিশিখা’ শব্দে কোন সমাস?

ক) দ্বিগু খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) বহুব্রীহি

 সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৩. ‘অর্ধেক’ শব্দটি কোন সমাস?

ক) দ্বন্দ্ব খ) তৎপুরুষ গ) বহুব্রীহি ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৪. ‘দুর্দশা’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ঘ) ব্যাহার্ব

 সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৫. ‘গৃহস্বামী’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বিগু ঘ) দ্বন্দ্ব

 সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৬. ‘দশগ্রাম’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বিগু ঘ) অব্যয়ভাব

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৭. ‘শরণাগত’ কোন সমাস?

ক) তৎপুরুষ খ) বহুব্রীহি গ) দ্বন্দ্ব ঘ) কর্মধারয়

সঠিক উত্তর: ক) তৎপুরুষ

৮. ‘মহাত্মা’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৯. ‘দুর্নীতি’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১০. ‘উপকার’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১১. ‘অতিশয়’ কোন সমাস?

ক) অব্যয়ভাব তৎপুরুষ খ) বহুব্রীহি গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: ক) অব্যয়ভাব তৎপুরুষ

১২. ‘অধিকার’ কোন সমাস?

ক) কর্মধারয় খ) তৎপুরুষ গ) বহুব্রীহি ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১৩. ‘নরনারী’ কোন সমাস?

ক) দ্বন্দ্ব খ) বহুব্রীহি গ) তৎপুরুষ ঘ) দ্বিগু

 সঠিক উত্তর: ক) দ্বন্দ্ব

১৪. ‘অশিক্ষিত’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ঘ) দ্বিগু

 সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১৫. ‘শহরবাসী’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

 সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১৬. ‘দুঃখভার’ কোন সমাস?

ক) তৎপুরুষ খ) বহুব্রীহি গ) দ্বন্দ্ব ঘ) দ্বিগু

 সঠিক উত্তর: ক) তৎপুরুষ

১৭. ‘উপকূল’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১৮. ‘অপরাধ’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ঘ) অব্যয়ভাব

 সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

১৯. ‘রাজারাজ’ কোন সমাস?

ক) দ্বন্দ্ব খ) তৎপুরুষ গ) বহুব্রীহি ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: ক) দ্বন্দ্ব

২০. ‘অধর্ম’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২১. ‘অপকার’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বিগু ঘ) দ্বন্দ্ব

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২২. ‘জনপদ’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) অব্যয়ভাব

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২৩. ‘অধিবেশন’ কোন সমাস?

ক) তৎপুরুষ খ) বহুব্রীহি গ) দ্বন্দ্ব ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: ক) তৎপুরুষ

২৪. ‘অতৃপ্তি’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২৫. ‘গৃহপতি’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২৬. ‘অধর্মচারী’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২৭. ‘উপবন’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বিগু ঘ) দ্বন্দ্ব

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২৮. ‘অপকারিতা’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

২৯. ‘অপরাজিত’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ঘ) অব্যয়ভাব

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ

৩০. ‘অধিবাসী’ কোন সমাস?

ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) কর্মধারয় ঘ) দ্বিগু

সঠিক উত্তর: খ) তৎপুরুষ


সমাস ব্যাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলেও, একে সহজে আয়ত্ত করা সম্ভব। উপরের আলোচনা এবং কৌশলগুলো আপনাকে এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দেবে। নিয়মিত অনুশীলন এবং এই কৌশলগুলোর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে সমাস আপনার জন্য আর কঠিন থাকবে না। এটি শুধু পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্যই নয়, বরং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি আপনার আগ্রহ বাড়াতেও সাহায্য করবে। ব্যাকরণের এমন আরও অনেক জটিল বিষয়কে সহজ করে জানতে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলগুলো পড়ুন। আশা করি, এই লেখাটি আপনার শিক্ষাজীবনে ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন