বর্ণ প্রকরণ/ ধ্বণি ও বর্ণ যে কোনো পরীক্ষায় ১০০ % কমন নিশ্চিত।
ধ্বণি :-
মানুষের বাক-প্রত্যঙ্গ (বাগযন্ত্র) অর্থাৎ কন্ঠনালী ,মুখবিবর, জিহবা, আলা জিহ্বা, ফুসফুস, কোমলতালু, শক্ততালু,দাঁত, মাড়ি, চোয়াল, ঠোঁট, নাক ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজ কে ধ্বণি বলা হয়।
👉এক কথায় উচ্চারণের একককে ধ্বনি বলে।
(বি,দ্র) কন্ঠনালী ,মুখবিবর, জিহবা, আলা জিহ্বা,
ফুসফুস, কোমলতালু, শক্ততালু,দাঁত, মাড়ি, চোয়াল, ঠোঁট, নাক ইত্যাদির হলো বাগযন্ত্র।
মনে রাখবেন।
👉ভাষার মূল উপাদান বা ক্ষুদ্রতম একক হচ্ছে ধ্বণি।
👉বাক্যের ক্ষুদ্রতম একক শব্দ।
👉শব্দের ক্ষুদ্রতম একক হচ্ছে বর্ণ।
ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য ।
ধ্বনি হলো মৌখিক ও বর্ণ হলো লৌখিক। অর্থাৎ
ধ্বনি কে লিখিতভাবে প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয় প্রতীক বা চিহ্ন । যার নাম বর্ণ অর্থাৎ
ধ্বনি মুখ দিয়ে প্রকাশ করতে হয় ।বর্ণ লিখে প্রকাশ করতে হয়। একটি ধ্বনি একটি প্রতীক
বা বর্ণ থাকে।
👉এক কথায় ধ্বনির লিখিত রুপই হচ্ছে বর্ণ।
অক্ষর(Syllable)
নিঃশ্বাসের একক প্রয়াসে উচ্চারিত ধ্বনি
বা ধ্বনি সমষ্টিকে অক্ষর বলে। অক্ষ উচ্চারণের কাল বা পরিমাণকে মাত্র বলে ।
যেমন- বন্ধন
শব্দে অক্ষর আছে ২ টি । বন+ ধন= বন্ধন (বিস্তারিত এই লিংকে
----)
মৌলিক ধ্বনি
বাংলা ভাষায় মৌলিক ধ্বনি ৫০টি । এ ধ্বনিগুলোকে ২ ভাগে বিভক্ত ।
১. স্বরধ্বনি। ১১ টি
২. ব্যঞ্জন ধ্বনি । ৩৯ টি
👉তবে
আধুনিক বাংলা ভাষায় ৪৫ টি বর্ণ পূর্ণ রুপে ব্যবহৃত হয়।
স্বরধ্বনি/ স্বরবর্ণ
আরো দেখুন-খেলার ছলে স্বর সন্ধি ....
যে সকল ধ্বনি অন্য কোনো ধ্বনির সাহায্য
ছাড়াই স্বাধিন ভাবে অর্থ প্রকাশ করতে পারে সেটাই স্বরধ্বনি/ স্বরবর্ণ। স্বরবর্ণ
১১ টি । যেমন- অ,আ,ই, ঈ ,উ,ঊ, ঋ ,এ,,ঐ,ও,ঔ। স্বরবর্ণ এর
সংক্ষিপ্ত রুপ হলো কার । স্বরবর্ণ এর সংক্ষিপ্ত
রুপ বা কার
চিহ্ন ১০ টি। কার চিহ্ন নেই এমন বর্ণ ১ টি (অ)। অ- এর কোনা চিহ্ন নেই । অ, অ্যা ধ্বনির
কোন শরীর বা রূপ বা আকার নাই । এটাকে বলা হয় নিলিন বর্ণ। অ্যা কোন
বর্ণ নয় জাস্ট ইংরেজি বর্ণ A এর রূপ মাত্র।
👉স্বরধ্বনিতে হ্রসস্বর ধ্বনি ৪ টি। যথা -অ,ই,উ,ঝ
👉স্বরধ্বনিতে হ্রসস্বর ধ্বনি ৭ টি। যথা- আ,ঈ,এ,এ,ঐ,ও,ঔ
👉স্বরবর্ণতে পূর্ণ
মাত্রার ধ্বনি ৬ টি। অ,আ,ই,এ,উ,ঈ
👉স্বরবর্ণতে
অর্ধমাত্রার ধ্বনি ১ টি। ঋ
👉স্বরবর্ণতে
মাত্রা নেই এমন ধ্বনি ৪ টি। এ,ঐ,ও,ঔ
মৌলিক ও যৌগিক স্বরধ্বনি
মৌলিকতা অনুযায়ী স্বরধ্বনি ২ প্রকার।
১.মৌলিক স্বরধ্বনি।
এই ধ্বনিকে ভাঙ্গা যায় না বা এরা একক
হিসেবে ব্যবহার হয়।মৌলিক স্বরধ্বনি সাতটি। এই ধ্বনি গুলোকে মূল স্বরধ্বনিও বলা হয়।
যথা - অ,আ,ই,উ,এ,ও, অ্যা।
২.যৌগিক স্বরধ্বনি।
পাশাপাশি ২ টি স্বরধ্বনি একক্ষর হিসেবে উচ্চারিত হলে তাকে
যৌগিক স্বরধ্বনি বা দিস্বর বলা হয়।
যৌগিক স্বরধ্বনি ২ টি। ঐ (অ+ই) ঐ
(অ+উ) যৌগিক স্বরধ্বনিকে দিস্বর বা সন্ধাক্ষর বলা হয়।
(বি,দ্র)
যৌগিক স্বর বলা হয় কারণ একটি বর্ণকে ভাঙলে দুটি স্বরবর্ণ পাওয়া যাবে।
ব্যঞ্জন ধ্বনি/ ব্যঞ্জনবর্ণ
যে সকল ধ্বনি অন্য কোনো ধ্বনির (স্বরধ্বনি)
সাহায্য ছাড়া স্বাধিন ভাবে অর্থ প্রকাশ করতে পারে না সেটাই ব্যঞ্জন ধ্বনি ।
ব্যঞ্জন ধ্বনি/ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ টি । যেমন- অ,আ,ই, ঈ ,উ,ঊ, ঋ ,এ,,ঐ,ও,ঔ।
স্বরবর্ণ এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো কার । ব্যঞ্জনবর্ণ এর সংক্ষিপ্ত রুপ ফলা।
ফলা চিহ্ন ৬ টি।
আরো দেখুন- ব্যঞ্জন সন্ধি কাকে বলে ? এটা কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত----
পূর্ণ মাত্রা, অর্ধমাত্রা ও মাত্রাহীন
স্বরধ্বনি/ স্বরবর্ণ। |
ব্যঞ্জন ধ্বনি/ব্যঞ্জনবর্ণ |
বর্ণমালা |
||
স্বরবর্ণ |
১১ |
ব্যঞ্জনবর্ণ |
৩৯ |
৫০ |
পূর্ণ মাত্রা |
৬ |
পূর্ণ মাত্রা |
২৬ |
৩২ |
অর্ধমাত্রা |
১ |
অর্ধমাত্রা |
৭ |
৮ |
মাত্রাহীন |
৪ |
মাত্রাহীন |
৬ |
১০ |
👉মোট পূর্ণমাত্রার ধনী হচ্ছে ৩২ টি
👉মোট অর্ধমাত্রার বর্ণ ৮ টি।
👉মোট মাত্রাহীন বর্ণ ১০ টি।
বর্গীয় বর্ণ
ক থেকে ম পযর্ন্ত মোট বর্গীয় বর্ণ
২৫ টি। এটাকে স্পর্শ ধ্বনি বলে। স্পর্শ ধ্বনি গুলোকে ৫ টি বরগে ভাগ করা হয়েছে । বর্গীয় ধ্বনির ১ম বর্ণানুযায়ী এই বর্গী এর
নাম করন করা হয়েছে।
স্পর্শ ধ্বনি |
অঘোষ স্বরতন্ত্রী কাপে না। |
ঘোষ স্বরতন্ত্রী কাপে।
|
||||
বর্গীয় বর্ণ |
বর্ণ |
১ |
২ |
৩ |
৪ |
৫ |
ক-বর্গীয় |
ক,খ,গ,ঘ,ঙ |
ক-
কন্ঠ |
খ |
গ |
ঘ |
ঙ |
চ- বর্গীয় |
চ,ছ,জ,ঝ,ঞ |
চ |
ছ |
জ |
ঝ |
ঞ |
ট- বর্গীয় |
ট,ঠ,ড.ঢ,ণ |
ট |
ঠ |
ড |
ঢ |
ণ - মূর্ধন্য |
ত- বর্গীয় |
ত,থ,দ,ধ,ন |
ত |
থ |
দ |
ধ |
ন- দন্ত |
প- বর্গীয় |
প,ফ,ব,ভ,ম |
প |
ফ |
ব |
ভ |
ম |
|
অল্পপ্রাণ (বাতাস কম ) |
মহাপ্রাণ (বাতাস বেশী ) |
অল্পপ্রাণ (বাতাস কম ) |
মহাপ্রাণ (বাতাস বেশী ) |
নাসিক্য মুখ + নাক |
উচ্চারণ স্থান অনুসারে নাম।
👉১.ক- বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণের স্থান হলো- কন্ঠ / জিহ্বা।
(ক - মনে রাখুন= কন্ঠ)
👉২.চ- বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণের স্থান হলো- তালু/ তালব্য
👉৩.ট- বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণের স্থান হলো- মূর্ধন্য/ পশ্চাৎ দন্তমূলীয় ।
(ণ- মনে রাখুন= ণ –
মূর্ধন্য)
👉৪.ত- বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণের স্থান হলো- দন্ত/দন্তমূলীয় ।
(ন- মনে রাখুন= ন – দন্ত)
👉৫.প- বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণের স্থান হলো- ওষ্ঠ/ ঠোঁট ।
(উচ্চারণে
দুই ঠোট লেগে যায়)
ঘোষ এবং অঘোষ
যে
বর্ণ উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী কাপে সেটা
ঘোষ ধ্বনি। প্রতি বর্গীয় ধ্বনির
৩,৪ ও ৫ নং বর্ণ হলো ঘোষ ধ্বনি।
ঘোষ ধ্বনি।
গ |
ঘ |
ঙ |
জ |
ঝ |
ঞ |
ড |
ঢ |
ণ |
দ |
ধ |
ন |
ব |
ভ |
ম |
যে
বর্ণ উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী কাপে না বা কম কাপে সেটা ঘোষ ধ্বনি। প্রতি বর্গীয় ধ্বনির ১ ও ২ নং বর্ণ হলো অঘোষ ধ্বনি।
অঘোষ ধ্বনি
ক |
খ |
চ |
ছ |
ট |
ঠ |
ত |
থ |
প |
ফ |
অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রাণ
যে
বর্ণ উচ্চারণের সময় বাতাসের চাপ কম থাকে সেটা অল্পপ্রাণ
ধ্বনি।প্রতি বর্গীয় ধ্বনির ১ ও ৩ নং বর্ণ হলো অল্পপ্রাণ ধ্বনি।
১ |
২ |
৩ |
৪ |
৫ |
ক |
খ |
গ |
ঘ |
ঙ |
চ |
ছ |
জ |
ঝ |
ঞ |
ট |
ঠ |
ড |
ঢ |
ণ |
ত |
থ |
দ |
ধ |
ন |
প |
ফ |
ব |
ভ |
ম |
অল্পপ্রাণ (বাতাস কম ) |
মহাপ্রাণ (বাতাস বেশী ) |
অল্পপ্রাণ (বাতাস কম ) |
মহাপ্রাণ (বাতাস বেশী ) |
নাসিক্য মুখ + নাক |
যে
বর্ণ উচ্চারণের সময় বাতাসের চাপ কম থাকে সেটা অল্পপ্রাণ
ধ্বনি।প্রতি বর্গীয় ধ্বনির ২ ও ৪ নং
বর্ণ হলো অল্পপ্রাণ
ধ্বনি।
(বি.দ্র) মনে রাখবেন
জোড় সংখ্যার শক্তি বা বাতাস বেশি।আর বেজোড় সংখ্যার
শক্তি বা বাতাস কম।
কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য
।
১.বর্গীয় বর্ণ ২৫ টি
২.অন্তঃস্থ ধ্বনি বা বর্ণ ৪ টি ।(য়,ব,রং,ল)
৩.উষ্ম/ শিস ধ্বনি ৪ টি (শ ,স,ষ,হ)
৪.তাড়ন জাত ধ্বনি ২ টি (ড়,ঢ়)
৫.পরাশ্রয়ী বর্ণ ৩ টি। (ঃ,৺, ং)
এরা স্বর চিহ্ন গ্রহণ
করে না এবং শব্দের প্রথমে বসে না।
৬. হ,ড় ঘোষ মহাপ্রাণ ধ্বনি।
৭.ড়,ঢ়,য়,ব এই চারটি বর্ণের রূপদান
করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তার বর্ণপরিচয় গ্রন্থে এটা উল্লেখ আছে।
৮.কম্পন জাত ধ্বনি = র
৯.পার্ষিক ধ্বনি বা বর্ণ =ল
১০.নাসিক্য বর্ণ ৫ টি।যথা- ঙ, ঞ,ণ,ন,ম
কিছু প্রয়োজনীয় যুক্ত
বর্ণ ।
জ্ঞ
= জ+ঞ |
হ্ম=হ+ম |
ঞ্চ=ঞ+চ |
ক্ষ্ম=ক+ষ+ম |
ঞ্জ
=ঞ+জ |
হ্ন=হ+ন |
ষ্ম=ষ+ম |
ত্থ=ত+থ |
ক্ষ=ক+ষ |
হ্ণ=হ+ণ |
ন্ধ=ন+ধ |
ব্ধ=ব+ধ |
৫.Verb কাকে বলে ,কত প্রকার ও কি কি ? বিস্তারিত--
৬.Object ও Cognate Object কাকে বলে? Object এর প্রকার এবং ব্যবহার।