সমাস পরিচিতি বিস্তারিত ও শর্ট টেকনিক
সমাস
হলো
একাধিক পদকে একটি পদে পরিণত করার প্রক্রিয়া। এর ফলে
বাক্য
সংক্ষিপ্ত, শ্রুতিমধুর এবং
ভাবপ্রকাশে গতিশীল
হয়।
ক. সমাসের প্রয়োজনীয় কিছু সংজ্ঞা:
- সমাস: একাধিক পদের একপদীকরণ প্রক্রিয়া।
- উদাহরণ: সিংহাসন (সিংহ চিহ্নিত আসন)।
- সমস্যমান
পদ: যে পদগুলো মিলে সমাস হয়, তাদের প্রত্যেকটি।
- উদাহরণ: 'সিংহ চিহ্নিত আসন' - এখানে 'সিংহ', 'চিহ্নিত', ও 'আসন' প্রতিটিই সমস্যমান পদ।
- সমস্ত
পদ/সমাসবদ্ধ পদ: সমাস হওয়ার পর যে নতুন পদটি গঠিত হয়।
- উদাহরণ: সিংহাসন।
- ব্যাসবাক্য/বিগ্রহ
বাক্য: সমাসবদ্ধ
পদকে ভেঙে যে বাক্য তৈরি হয়। এর মাধ্যমে সমাসের অর্থ সুস্পষ্ট হয়।
- উদাহরণ: সিংহাসন-এর ব্যাসবাক্য হলো 'সিংহ চিহ্নিত আসন'।
- পূর্বপদ
ও উত্তরপদ (পরপদ): সমস্ত পদের প্রথম অংশকে পূর্বপদ এবং পরের অংশকে উত্তরপদ বা পরপদ বলে।
খ. সমাসের প্রকারভেদ ।
প্রধানত সমাস
ছয়
প্রকার। এদের
মধ্যে
পদের
অর্থের
প্রাধান্য অনুযায়ী সম্পর্কটি বোঝা
অত্যন্ত জরুরি:
|
সমাসের
নাম |
অর্থের
প্রাধান্য |
উদাহরণ
(সমস্ত পদ) |
ব্যাসবাক্য |
|
১. দ্বন্দ্ব
সমাস |
উভয় পদের অর্থের প্রাধান্য |
মা-বাবা |
মা ও বাবা |
|
২. দিগু
সমাস |
পূর্বপদ সংখ্যাবাচক, উত্তরপদের অর্থের প্রাধান্য |
ত্রিফলা |
তিন ফলের সমাহার |
|
৩. কর্মধারয়
সমাস |
উত্তরপদের অর্থের প্রাধান্য (বিশেষণ+বিশেষ্য) |
নীলপদ্ম |
নীল যে পদ্ম |
|
৪. তৎপুরুষ
সমাস |
উত্তরপদের অর্থের প্রাধান্য (বিভক্তি লোপ) |
রথযাত্রা |
রথের যাত্রা |
|
৫. বহুব্রীহি
সমাস |
সমস্যমান কোনো পদের অর্থের প্রাধান্য থাকে
না,
অন্য একটি অর্থের প্রাধান্য থাকে। |
দশানন |
দশ আনন (মুখ)
যার |
|
৬. অব্যয়ীভাব
সমাস |
পূর্বপদটি অব্যয় এবং সেই অব্যয় পদের অর্থের প্রাধান্য |
আমরণ |
মরণ পর্যন্ত |
২. শর্ট টেকনিক ও চেনার সহজ উপায় ।
সমাস
চেনার
জন্য
কিছু
সহজ
কৌশল
নিচে
দেওয়া
হলো:
ক. ব্যাসবাক্য দেখে চেনার কৌশল:
|
সমাস |
ব্যাসবাক্যে
ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ শব্দ/পদ |
|
দ্বন্দ্ব |
'ও',
'আর',
'এবং'
(সংযোগ অব্যয়) |
|
দিগু |
'সমাহার' বা
'মিলন'
(পূর্বপদ সংখ্যাবাচক হতে
হবে) |
|
কর্মধারয় |
'যে',
'যা',
'তা',
'রূপ',
'মত'
(তুলনাবাচক) |
|
তৎপুরুষ |
বিভক্তি (কে, দ্বারা, হতে,
র,
তে)
লোপ
পায় |
|
বহুব্রীহি |
'যার',
'যিনি',
'যে'
(সর্বনাম পদ) |
|
অব্যয়ীভাব |
'পর্যন্ত', 'বিপরীত', 'অভাব',
'সদৃশ'
(অব্যয়ের অর্থ) |
ধ্বনি ও বর্ণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৬০ টি প্রশ্ন ও উত্তর
খ. সমস্ত পদের অর্থের প্রাধান্য অনুযায়ী চেনার কৌশল।
|
সমাসের
নাম |
সমস্ত
পদের অর্থের মূল ফোকাস |
উদাহরণ |
টেকনিক্যাল
টিপস |
|
দ্বন্দ্ব |
পূর্বপদ ও পরপদ দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। |
ভাই-বোন |
উভয়
প্রধান (দুজনেরই মান
আছে)। |
|
দিগু |
শুধু পরপদের অর্থ। |
সপ্তর্ষি |
'সপ্ত'
(সংখ্যা) গুরুত্বপূর্ণ নয়,
'ঋষি'
(পরপদ)
গুরুত্বপূর্ণ। |
|
কর্মধারয় |
শুধু পরপদের অর্থ। |
কালসাপ |
'কাল'
(বিশেষণ) গুরুত্বপূর্ণ নয়,
'সাপ'
(পরপদ)
গুরুত্বপূর্ণ। |
|
তৎপুরুষ |
শুধু পরপদের অর্থ। |
রাজপুত্র |
'রাজা'
গুরুত্বপূর্ণ নয়,
'পুত্র' (পরপদ)
গুরুত্বপূর্ণ। |
|
বহুব্রীহি |
পূর্ব বা পরপদের কোনোটিই নয়,
তৃতীয় একটি অর্থ। |
বিনা-পাণি |
'বীণা'
বা
'পাণি'
(হাত)
নয়,
সরস্বতী। |
|
অব্যয়ীভাব |
পূর্বপদের
অব্যয়টির অর্থ। |
উপকূল |
'কূল'
নয়,
অব্যয় 'উপ'
(সমীপ/কাছে) এর অর্থ। |
গ. বিশেষ কিছু টেকনিক ।
- ১.
দিগু ও বহুব্রীহির পার্থক্য:
- দিগু: সংখ্যা + বিশেষ্য = সমষ্টি। (যেমন: ত্রিপদী = তিন পদের সমাহার)
- বহুব্রীহি: সংখ্যা + বিশেষ্য = অন্য অর্থ/ব্যক্তি। (যেমন: দশমিক = দশ (ভাগ) যার)
- ২.
কর্মধারয় ও তৎপুরুষের পার্থক্য:
- কর্মধারয়: পূর্বপদ বিশেষণ বা উপমা/তুলনা বোঝায়। (যেমন: মহাসাগর = মহান যে সাগর)
- তৎপুরুষ: ব্যাসবাক্যে বিভক্তি লোপ পায়। (যেমন: ধানখেত = ধানের খেত, 'এর' বিভক্তি লোপ)
- ৩.
অলোক সমাস: যে সমাসে ব্যাসবাক্যের
কোনো পদের বিভক্তি লোপ হয় না, তাকে অলোক সমাস বলে। (যেমন: ঘিয়ে-ভাজা ঘিয়ে ভাজা)।
এটি দ্বন্দ্ব, তৎপুরুষ এবং বহুব্রীহিতে হতে পারে।
সমাস সংক্রান্ত MCQ ১ থেকে ১৫
প্রশ্ন ১। কোনটি দ্বিগু
সমাসের উদাহরণ?
(ক) মাতা-পিতা (খ) ত্রিভুবন (গ)
দশানন (ঘ) হাতেখড়ি
সঠিক উত্তর: (খ) ত্রিভুবন
ব্যাখ্যা: দ্বিগু সমাসের পূর্বপদ সংখ্যাবাচক (ত্রি/তিন) হয় এবং পরপদের অর্থের প্রাধান্য থাকে। ত্রিভুবন এর ব্যাসবাক্য হলো
'তিন ভূবনের সমাহার'।
প্রশ্ন ২। 'দশানন' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) দ্বিগু (খ) দ্বন্দ্ব (গ)
বহুব্রীহি (ঘ) তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (গ) বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: বহুব্রীহি সমাসে সমস্যমান কোনো পদের অর্থ প্রাধান্য না পেয়ে সম্পূর্ণ
ভিন্ন একটি অর্থ বোঝায়। দশানন = দশ আনন (মুখ)
যার (অর্থাৎ, রাবণ)।
প্রশ্ন ৩। 'সিংহ চিহ্নিত আসন' এর সমস্ত পদ
কোনটি এবং এটি কোন সমাস?
(ক) সিংহাসন, দ্বিগু (খ) সিংহাসন, মধ্যপদলোপী
কর্মধারয় (গ) সিংহাসন, তৎপুরুষ
(ঘ) সিংহাসন, দ্বন্দ্ব
সঠিক উত্তর: (খ) সিংহাসন, মধ্যপদলোপী
কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো
'সিংহ চিহ্নিত আসন'। যে কর্মধারয়
সমাসে ব্যাসবাক্যের মাঝের পদটি ('চিহ্নিত') লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে।
প্রশ্ন ৪। 'মুখে ভাত' কোন সমাস?
(ক) নঞ তৎপুরুষ (খ)
অলুক তৎপুরুষ (গ) উপপদ তৎপুরুষ
(ঘ) অলুক দ্বন্দ্ব
সঠিক উত্তর: (খ) অলুক তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: অলুক তৎপুরুষে পূর্বপদের বিভক্তি ('মুখে' = মুখ + এ) সমস্ত পদে
লোপ হয় না।
প্রশ্ন ৫। 'ক্ষুধার্ত' কোন সমাস?
(ক) কর্মধারয় (খ) তৎপুরুষ (গ)
দ্বন্দ্ব (ঘ) বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (খ) তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: ক্ষুধা
দ্বারা আর্দ্র বা 'ক্ষুধা কর্তৃক পীড়িত'। এটি তৃতীয়া
তৎপুরুষের
উদাহরণ, যেখানে তৃতীয়া বিভক্তি ('দ্বারা' বা 'কর্তৃক') লোপ পেয়েছে।
প্রশ্ন ৬। 'উপকূল' সমস্ত পদটির সঠিক ব্যাসবাক্য কোনটি?
(ক) কূল ও উপ (খ)
কূলের নিকট (গ) কূল পর্যন্ত
(ঘ) অন্য কূল
সঠিক উত্তর: (খ) কূলের নিকট
ব্যাখ্যা: এটি অব্যয়ীভাব সমাস। 'উপ' অব্যয়টি
এখানে 'সমীপ' বা 'কাছে' অর্থ প্রকাশ করছে। উপকূল = কূলের সমীপ/নিকট।
প্রশ্ন ৭। 'আশীবিষ' কোন সমাস?
(ক) দ্বিগু (খ) বহুব্রীহি (গ)
কর্মধারয় (ঘ) দ্বন্দ্ব
সঠিক উত্তর: (খ) বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: ব্যাসবাক্য: আশীতে (দাঁতে) বিষ যার। এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ (সাপ) বোঝানোয় বহুব্রীহি সমাস।
প্রশ্ন ৮। 'আজন্ম' সমস্ত পদের 'আ' উপসর্গটি কী
অর্থ প্রকাশ করে?
(ক) বিপরীত (খ) অভাব (গ)
পর্যন্ত (ঘ) সাদৃশ্য
সঠিক উত্তর: (গ) পর্যন্ত
ব্যাখ্যা: এটি অব্যয়ীভাব সমাস। এখানে 'আ'
অব্যয়টি 'পর্যন্ত' অর্থ প্রকাশ করেছে। আজন্ম = জন্ম পর্যন্ত।
প্রশ্ন ৯। নিচের কোনটি
দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ?
(ক) ত্রিকাল (খ) বিনা পানি
(গ) দা-কুমড়া (ঘ)
জনৈক
সঠিক উত্তর: (গ) দা-কুমড়া
ব্যাখ্যা: যে সমাসে পূর্বপদ
ও পরপদ উভয় পদের অর্থের প্রাধান্য থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। দা ও কুমড়া।
প্রশ্ন ১০। 'নীল যে অম্বর' – এর
সমস্ত পদ ও সমাস
নির্ণয় করুন।
(ক) নীলাম্বর, বহুব্রীহি (খ) নীলাম্বর, কর্মধারয়
(গ) নীলঅম্বর, তৎপুরুষ (ঘ) নীলাকাশ, দ্বিগু
সঠিক উত্তর: (খ) নীলাম্বর, কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এটি কর্মধারয় সমাস। পূর্বপদ বিশেষণ
('নীল') ও পরপদ বিশেষ্য
('অম্বর') এবং পরপদের অর্থের প্রাধান্য।
প্রশ্ন ১১। 'জায়ে-পতি' কোন দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ?
(ক) বিরোধার্থক দ্বন্দ্ব (খ) সমার্থক দ্বন্দ্ব
(গ) অলুক দ্বন্দ্ব (ঘ) একশেষ দ্বন্দ্ব
সঠিক উত্তর: (গ) অলুক দ্বন্দ্ব
ব্যাখ্যা: সমস্ত পদে পূর্বপদের বিভক্তি ('এ' কার) লোপ
পায়নি। যে দ্বন্দ্ব সমাসে
কোনো পদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
প্রশ্ন ১২। 'অন্য গ্রাম' – এই ব্যাসবাক্যের সমস্ত
পদ কোনটি?
(ক) গ্রামীণ (খ) গ্রামান্তর (গ)
গ্রামাগার (ঘ) অন্যগ্রাম
সঠিক উত্তর: (খ) গ্রামান্তর
ব্যাখ্যা: এটি নিত্য সমাস। এই সমাসের
ব্যাসবাক্য হয় না, অন্য
পদের সাহায্য নিতে হয়। গ্রামান্তর = অন্য গ্রাম।
প্রশ্ন ১৩। 'মন মাঝি' কোন
কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ?
(ক) উপমান কর্মধারয় (খ) উপমিত কর্মধারয়
(গ) রূপক কর্মধারয় (ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (গ) রূপক কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো
'মন রূপ মাঝি'। উপমেয় (মন)
এবং উপমান (মাঝি) এর মধ্যে অভিন্নতা
বা অভেদ কল্পনা করা হলে তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলে।
প্রশ্ন ১৪। 'প্র-গতি' থেকে গঠিত সমস্ত পদ 'প্রগতি' কোন সমাস?
(ক) অব্যয়ীভাব সমাস (খ) নিত্য সমাস
(গ) প্রাদি সমাস (ঘ) উপপদ তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (গ) প্রাদি সমাস
ব্যাখ্যা: প্রাদি সমাস হলো তৎপুরুষ সমাসের একটি উপধারা, যেখানে পূর্বপদে 'প্র', 'পরা', 'অনু' ইত্যাদি অব্যয়/উপসর্গ থাকে এবং সমস্ত পদটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে।
প্রশ্ন ১৫। 'ছেলেধরা' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) উপপদ তৎপুরুষ (খ) অলুক তৎপুরুষ
(গ) কর্মধারয় (ঘ) ষষ্ঠী তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (ক) উপপদ তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: 'ছেলেকে
ধরে যে'। উপপদ
তৎপুরুষ সমাসে, পূর্বপদ (ছেলে) একটি বিশেষ্য এবং পরপদটি একটি কৃদন্ত পদ ('ধরা') হয়।
আপনার অনুরোধ অনুসারে, সমাস সম্পর্কিত আরও ৫টি নতুন গুরুত্বপূর্ণ MCQ প্রশ্ন (১৬ থেকে ২০) তাদের অপশন, সঠিক উত্তর, এবং ব্যাখ্যাসহ প্রস্তুত করা হলো:
প্রশ্ন ১৬। 'নদীমাতৃক' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) নঞ তৎপুরুষ
(খ) অলুক বহুব্রীহি
(গ) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি
(ঘ) উপমিত কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (গ) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: নদী মাতা যার। যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদ ও পরপদ উভয়ই ভিন্ন ভিন্ন বিভক্তিযুক্ত হয় বা ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। এখানে পূর্বপদ 'নদী' এবং পরপদ 'মাতৃক' ভিন্ন বিভক্তি সম্পর্কযুক্ত।
প্রশ্ন ১৭। 'নদীপথ' এর সঠিক ব্যাসবাক্য কোনটি?
(ক) নদী ও পথ
(খ) নদী পথের ন্যায়
(গ) নদী দ্বারা পথ
(ঘ) নদী থেকে পথ
সঠিক উত্তর: (ক) নদী ও পথ
ব্যাখ্যা: এর সমস্ত পদ 'নদীপথ' হলো দ্বন্দ্ব সমাস। যদিও শব্দটি সাধারণত 'ষষ্ঠী তৎপুরুষ' মনে হতে পারে, কিন্তু এটি নদী এবং পথ—উভয়কেই সমানভাবে নির্দেশ করে। বিশেষত বিরোধার্থক বা সাধারণ সমার্থক দ্বন্দ্বের মতো এখানেও উভয় পদেরই প্রাধান্য রয়েছে।
প্রশ্ন ১৮। নিচের কোনটি 'নঞ তৎপুরুষ' সমাসের উদাহরণ?
(ক) আগমন
(খ) অকাল
(গ) অলুক
(ঘ) অজ্ঞান
সঠিক উত্তর: (ঘ) অজ্ঞান
ব্যাখ্যা: যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদটি 'নঞর্থক' (না-বাচক) অব্যয় দ্বারা গঠিত হয় এবং পরপদের অর্থের প্রাধান্য থাকে, তাকে নঞ তৎপুরুষ সমাস বলে। অজ্ঞান = জ্ঞান নেই যা। (বি.দ্র. 'অকাল'ও হতে পারত, তবে 'অজ্ঞান' সর্বাধিক পরিচিত উদাহরণ)।
প্রশ্ন ১৯। 'চন্দ্রমুখ' কোন কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ?
(ক) উপমান কর্মধারয়
(খ) উপমিত কর্মধারয়
(গ) রূপক কর্মধারয়
(ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (খ) উপমিত কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: মুখ চন্দ্রের (চাঁদের) মতো। উপমিত কর্মধারয় সমাসে উপমেয় (মুখ) এবং উপমান (চন্দ্র) থাকে, কিন্তু এদের সাধারণ ধর্মটি উহ্য থাকে (যেমন: সুন্দর)। এখানে মুখকে চাঁদের সাথে তুলনা করা হয়েছে, এবং উপমেয়কে আগে আনা হয়েছে।
প্রশ্ন ২০। 'স্বেচ্ছাসেবী' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) প্রাদি সমাস
(খ) উপপদ তৎপুরুষ
(গ) অলুক তৎপুরুষ
(ঘ) নিত্য সমাস
সঠিক উত্তর: (খ) উপপদ তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: 'স্বেচ্ছায় সেবা করে যে'। যে তৎপুরুষ সমাসে পরপদটি একটি কৃদন্ত পদ (সেবী) এবং পূর্বপদ (স্বেচ্ছা) তার সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত, তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে।
প্রশ্ন ২১। 'চিরসুখী' এর সঠিক ব্যাসবাক্য কোনটি এবং এটি কোন সমাস?
(ক) চিরকাল ব্যাপীয়া সুখী; দ্বিতীয়া তৎপুরুষ (খ) চিরকাল ধরে যে সুখী; মধ্যপদলোপী কর্মধারয় (গ) চিরকাল যার সুখ; বহুব্রীহি (ঘ) চিরকাল যে সুখী; কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (ক) চিরকাল ব্যাপীয়া সুখী; দ্বিতীয়া তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'চিরকাল ব্যাপীয়া সুখী'। এখানে 'ব্যাপিয়া' বা দ্বিতীয়া বিভক্তি ('কে') লোপ পেয়েছে এবং উত্তরপদ (সুখী) এর অর্থের প্রাধান্য রয়েছে। এটি দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস।
প্রশ্ন ২২। 'অনুদৈনিক' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) নঞ তৎপুরুষ (খ) অলুক তৎপুরুষ (গ) নিত্য সমাস (ঘ) অব্যয়ীভাব সমাস
সঠিক উত্তর: (ঘ) অব্যয়ীভাব সমাস
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: দিন দিন (প্রতি দিন)। অব্যয়ীভাব সমাসে পূর্বপদটি অব্যয় (অনু) এবং সেই অব্যয়ের অর্থের প্রাধান্য থাকে। এখানে 'অনু' অব্যয়টি 'পৌনঃপুনিকতা' বা 'বারংবারতা' অর্থ প্রকাশ করছে।
প্রশ্ন ২৩। 'তেপান্তর' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) দিগু সমাস (খ) নঞ তৎপুরুষ (গ) বহুব্রীহি সমাস (ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (ক) দিগু সমাস
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: তিন পান্তরের সমাহার। পূর্বপদ সংখ্যাবাচক (তিন) এবং পরপদ (পান্তর) এর অর্থের প্রাধান্য এবং সমষ্টি বোঝানোয় এটি দিগু সমাস।
প্রশ্ন ২৪। যে সমাসে পূর্বপদ বিশেষণ এবং পরপদ বিশেষ্য, তাকে সাধারণত কোন সমাস বলে?
(ক) দ্বিগু (খ) উপপদ তৎপুরুষ (গ) কর্মধারয় (ঘ) বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (গ) কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: কর্মধারয় সমাসের মূল বৈশিষ্ট্যই হলো পূর্বপদ বিশেষণ বা বিশেষ্য রূপে এবং উত্তরপদ বিশেষ্য বা বিশেষণ রূপে থাকে এবং উত্তরপদের অর্থ প্রধান হয়। যেমন: নীল যে পদ্ম = নীলপদ্ম।
প্রশ্ন ২৫। 'ঘরছাড়া' এর ব্যাসবাক্য কোনটি এবং এটি কোন সমাস?
(ক) ঘর হতে ছাড়া; পঞ্চমী তৎপুরুষ (খ) ঘর যার ছাড়া; বহুব্রীহি (গ) ঘর ও ছাড়া; দ্বন্দ্ব (ঘ) ঘরকে ছাড়া; দ্বিতীয়া তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (ক) ঘর হতে ছাড়া; পঞ্চমী তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: 'ঘরছাড়া' বলতে 'ঘর থেকে বা হতে ছাড়া' বোঝানো হয়। যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের পঞ্চমী বিভক্তি (হতে, থেকে) লোপ পায়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
প্রশ্ন ২৬। 'পীতাম্বর' বলতে যিনি শ্রীকৃষ্ণকে বোঝায়, সেটি কোন সমাস?
(ক) কর্মধারয় সমাস (খ) নিত্য সমাস (গ) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি (ঘ) সমানাধিকরণ বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (ঘ) সমনাধিকরণ বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: পীত (হলুদ) অম্বর (বস্ত্র) যার। যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদ বিশেষণ (পীত) এবং পরপদ বিশেষ্য (অম্বর) হয়, তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেহেতু এটি ভিন্ন অর্থ (শ্রীকৃষ্ণ) বোঝাচ্ছে, তাই এটি বহুব্রীহি।
প্রশ্ন ২৭। 'শোকানল' শব্দটি কোন কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ?
(ক) উপমান কর্মধারয় (খ) উপমিত কর্মধারয় (গ) রূপক কর্মধারয় (ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (গ) রূপক কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: শোক রূপ অনল (আগুন)। শোক এবং অনল (আগুন) এর মধ্যে যখন অভিন্নতা কল্পনা করা হয় (শোকের তীব্রতা), তখন তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলে।
প্রশ্ন ২৮। নিচের কোনটি অ-ভাব অর্থে গঠিত অব্যয়ীভাব সমাস?
(ক) দুর্ভিক্ষ (খ) প্রতিক্ষণ (গ) উপকণ্ঠ (ঘ) যথারীতি
সঠিক উত্তর: (ক) দুর্ভিক্ষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: ভিক্ষার অভাব। অব্যয়ীভাব সমাসে 'দুঃ' (এখানে 'দুর্') অব্যয়টি 'অভাব' বা 'বিরুদ্ধ' অর্থে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ২৯। 'কানাকানি' কোন দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ?
(ক) সমার্থক দ্বন্দ্ব (খ) একশেষ দ্বন্দ্ব (গ) অলুক বহুব্রীহি (ঘ) ব্যতিহার বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (ঘ) ব্যতিহার বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: কানে কানে যে কথা। ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাসে একই ধরনের কাজ একাধিক ব্যক্তি একে অপরের সাথে করছে বোঝায়। যেমন: হাতে হাতে, চুলাচুলি।
প্রশ্ন ৩০। 'আকাশবাণী' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) মধ্যপদলোপী কর্মধারয় (খ) ষষ্ঠী তৎপুরুষ (গ) দ্বিতীয়া তৎপুরুষ (ঘ) অলুক তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (ক) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: আকাশ থেকে আগত বাণী। এখানে মাঝের পদ 'থেকে আগত' বা 'কর্তৃক প্রচারিত' লোপ পেয়েছে। যে কর্মধারয় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যের পদ লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে।
প্রশ্ন ৩১। 'হাতেখড়ি' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) অলুক দ্বন্দ্ব (খ) অলুক বহুব্রীহি (গ) পঞ্চমী তৎপুরুষ (ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (খ) অলুক বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'হাতে খড়ি দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে'। এখানে সমস্ত পদে পূর্বপদের বিভক্তি ('এ' কার) লোপ পায়নি এবং সমস্ত পদটি একটি ভিন্ন অর্থ (একটি বিশেষ অনুষ্ঠান) বোঝাচ্ছে। এটি অলুক বহুব্রীহি সমাস।
প্রশ্ন ৩২। 'পুরুষসিংহ' কোন কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ?
(ক) উপমান কর্মধারয় (খ) উপমিত কর্মধারয় (গ) রূপক কর্মধারয় (ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (খ) উপমিত কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'পুরুষ সিংহের ন্যায়'। এই সমাসে উপমেয় (পুরুষ) কে উপমান (সিংহ) এর সাথে তুলনা করা হয়েছে, কিন্তু সাধারণ ধর্ম (যেমন: বলশালী) উহ্য রয়েছে। এখানে উপমেয়কে আগে আনা হয়েছে, তাই এটি উপমিত কর্মধারয় সমাস।
প্রশ্ন ৩৩। নিচের কোনটি নিত্য সমাসের উদাহরণ?
(ক) দেশান্তর (খ) চতুরঙ্গ (গ) প্রগতি (ঘ) জনৈক
সঠিক উত্তর: (ক) দেশান্তর
ব্যাখ্যা: নিত্য সমাসকে ব্যাসবাক্য দ্বারা বিশ্লেষণ করা যায় না এবং এর ব্যাখ্যার জন্য অন্য পদের সাহায্য নিতে হয়। দেশান্তর = অন্য দেশ।
প্রশ্ন ৩৪। 'বিলাতফেরত' সমস্ত পদটি কোন তৎপুরুষ সমাস?
(ক) তৃতীয়া তৎপুরুষ (খ) পঞ্চমী তৎপুরুষ (গ) ষষ্ঠী তৎপুরুষ (ঘ) সপ্তমী তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (খ) পঞ্চমী তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'বিলাত থেকে ফেরত' বা 'বিলাত হতে ফেরত/আগত'। যে তৎপুরুষ সমাসে পঞ্চমী বিভক্তি ('থেকে', 'হতে') লোপ পায়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
প্রশ্ন ৩৫। 'মাঠে-ঘাটে' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) কর্মধারয় (খ) অলুক তৎপুরুষ (গ) অলুক দ্বন্দ্ব (ঘ) বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (গ) অলুক দ্বন্দ্ব
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'মাঠে ও ঘাটে'। এখানে পূর্বপদ ও পরপদ উভয়েরই বিভক্তি ('এ' কার) সমস্ত পদে অক্ষুণ্ণ রয়েছে এবং উভয় পদের অর্থের প্রাধান্য রয়েছে। এটি অলুক দ্বন্দ্ব সমাস।
প্রশ্ন ৩৬। 'অনবধান' শব্দটি কোন সমাসের অন্তর্গত?
(ক) অব্যয়ীভাব (খ) নঞ তৎপুরুষ (গ) প্রাদি (ঘ) অলুক বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (খ) নঞ তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: নেই অবধান যার/নয় অবধান। যে তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদ 'নঞর্থক' (না-বাচক) অব্যয় দ্বারা গঠিত হয়, তাকে নঞ তৎপুরুষ সমাস বলে।
প্রশ্ন ৩৭। 'পঞ্চনদ' এর ব্যাসবাক্য কী?
(ক) পঞ্চ নদ যেখানে (খ) পঞ্চ নদীর মিলন (গ) পঞ্চ নদ ও নদ (ঘ) পঞ্চ নদীর মত
সঠিক উত্তর: (খ) পঞ্চ নদীর মিলন
ব্যাখ্যা: পঞ্চনদ হলো দ্বিগু সমাস। দ্বিগু সমাসে পূর্বপদ সংখ্যাবাচক (পঞ্চ/পাঁচ) হয় এবং সমষ্টি বা মিলন বোঝায়।
প্রশ্ন ৩৮। 'পরিবর্তন' সমস্ত পদটি কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) নিত্য সমাস (খ) প্রাদি সমাস (গ) উপপদ তৎপুরুষ (ঘ) অলুক তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (খ) প্রাদি সমাস
ব্যাখ্যা: প্রাদি সমাসে পূর্বপদটি 'প্র', 'পরা', 'অনু', 'পরি' (এখানে 'পরি') ইত্যাদির মতো অব্যয় বা উপসর্গ দ্বারা গঠিত হয় এবং সমস্ত পদটি বিশেষ অর্থ বহন করে। পরিবর্তন = পরি (বিশেষ রূপে) যে বর্তন বা আবর্তন।
প্রশ্ন ৩৯। 'হাসাহাসি' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) অলুক দ্বন্দ্ব (খ) অলুক তৎপুরুষ (গ) ব্যতিহার বহুব্রীহি (ঘ) উপপদ তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (গ) ব্যতিহার বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'হাসিতে হাসিতে যে কাজ'। যে বহুব্রীহি সমাসে একই ধরনের কাজ একাধিক ব্যক্তি বা পক্ষ একে অপরের সাথে করছে বোঝায় (যেমন: চুলাচুলি, মারামারি), তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে।
প্রশ্ন ৪০। 'উপশহর' কোন অর্থে গঠিত অব্যয়ীভাব সমাস?
(ক) সাদৃশ্য (তুল্যতা) (খ) পর্যন্ত (গ) অভাব (ঘ) অনতিক্রম্যতা
সঠিক উত্তর: (ক) সাদৃশ্য (তুল্যতা)
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: শহরের সাদৃশ্য বা শহরের নিকট। অব্যয়ীভাব সমাসে 'উপ' অব্যয়টি সাদৃশ্য বা সমীপ অর্থ প্রকাশ করে।
প্রশ্ন ৪১। 'কাজলকালো' কোন কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ?
(ক) উপমান কর্মধারয়
(খ) উপমিত কর্মধারয়
(গ) রূপক কর্মধারয়
(ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (ক) উপমান কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: কাজলের ন্যায় কালো। উপমান কর্মধারয় সমাসে উপমান (কাজল) এবং সাধারণ ধর্ম (কালো) উল্লেখ থাকে, কিন্তু উপমেয় (যার তুলনা করা হচ্ছে, যেমন চুল) উহ্য থাকে। কাজলের রঙের সাথে কালোর তুলনা বোঝানো হচ্ছে।
প্রশ্ন ৪২। 'প্রতিপক্ষ' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) নঞ তৎপুরুষ
(খ) প্রাদি সমাস
(গ) অব্যয়ীভাব সমাস
(ঘ) অলুক বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (গ) অব্যয়ীভাব সমাস
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: পক্ষের বিপরীত। অব্যয়ীভাব সমাসে পূর্বপদ অব্যয় (প্রতি) এবং সেই অব্যয়ের অর্থের প্রাধান্য থাকে। এখানে 'প্রতি' অব্যয়টি 'বিপরীত' বা 'সদৃশ' অর্থ প্রকাশ করছে।
প্রশ্ন ৪৩। 'বিলেতফেরত' সমস্ত পদটি কোন তৎপুরুষ সমাস?
(ক) তৃতীয়া তৎপুরুষ
(খ) পঞ্চমী তৎপুরুষ
(গ) ষষ্ঠী তৎপুরুষ
(ঘ) দ্বিতীয়া তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (খ) পঞ্চমী তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য হলো 'বিলেত হতে ফেরত' বা 'বিলেত থেকে ফেরত'। যে তৎপুরুষ সমাসে পঞ্চমী বিভক্তি ('হতে', 'থেকে') লোপ পায়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
প্রশ্ন ৪৪। 'কিশোরী' (কিশোর + ঈ) সমস্ত পদটি ব্যাকরণের কোন নিয়মে গঠিত হয়েছে?
(ক) দ্বন্দ্ব সমাস
(খ) নিত্য সমাস
(গ) কর্মধারয় সমাস
(ঘ) একশেষ দ্বন্দ্ব
সঠিক উত্তর: (ঘ) একশেষ দ্বন্দ্ব
ব্যাখ্যা: একশেষ দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলো একসাথে না থেকে, কেবল একটি পদ অবশিষ্ট থাকে এবং সেটি বহুবচনের রূপ ধারণ করে। যেমন: সে, তুমি ও আমি $\rightarrow$ আমরা; কিশোর ও কিশোরী $\rightarrow$ কিশোরী (যদিও বর্তমানে কিশোরী বলতে একক বচন বোঝানো হয়, কিন্তু এই সমাস প্রক্রিয়ায় এটি স্ত্রী ও পুরুষবাচক উভয়কে বোঝাত)।
প্রশ্ন ৪৫। 'অন্তরীপ' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) নিত্য সমাস
(খ) প্রাদি সমাস
(গ) উপপদ তৎপুরুষ
(ঘ) দ্বিগু সমাস
সঠিক উত্তর: (ক) নিত্য সমাস
ব্যাখ্যা: যে সমাসকে ব্যাসবাক্য দ্বারা বিশ্লেষণ করা যায় না বা বিশ্লেষণ করতে অন্য পদের সাহায্য নিতে হয়, তাকে নিত্য সমাস বলে। অন্তরীপ = অন্তরে অপ (জল) যার, অথবা অন্য অপ। (এটি নিত্য সমাসের একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ)।
প্রশ্ন ৪৬। 'শীতাতপনিয়ন্ত্রিত' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) দ্বিগু সমাস
(খ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
(গ) ষষ্ঠী তৎপুরুষ
(ঘ) বহুব্রীহি সমাস
সঠিক উত্তর: (খ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: শীত ও আতপ (গ্রীষ্ম) নিবারণের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মাঝের পদগুলো ('নিবারণের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র দ্বারা') লোপ পেয়েছে, তাই এটি মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস।
প্রশ্ন ৪৭। 'অশীতিপর' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি
(খ) অলুক বহুব্রীহি
(গ) নঞ তৎপুরুষ
(ঘ) উপমিত কর্মধারয়
সঠিক উত্তর: (ক) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: অশীতি (আশি) পরিমিত বয়স যার। যে বহুব্রীহি সমাসে সমস্যমান পদগুলো ভিন্ন বিভক্তিযুক্ত হয় বা ভিন্ন সম্পর্কযুক্ত হয় (এখানে 'অশীতি' সংখ্যা এবং 'পর' বিশেষ্য), তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে।
প্রশ্ন ৪৮। 'সু-কণ্ঠ' সমস্ত পদটি কোন বহুব্রীহি সমাস?
(ক) সমানাধিকরণ বহুব্রীহি
(খ) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি
(গ) নঞ বহুব্রীহি
(ঘ) ব্যতিহার বহুব্রীহি
সঠিক উত্তর: (ক) সমানাধিকরণ বহুব্রীহি
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: সুন্দর কণ্ঠ যার। যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদ বিশেষণ (সু/সুন্দর) এবং পরপদ বিশেষ্য (কণ্ঠ) হয়, তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে।
প্রশ্ন ৪৯। 'চৌরাস্তা' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) কর্মধারয়
(খ) দিগু
(গ) বহুব্রীহি
(ঘ) অলুক দ্বন্দ্ব
সঠিক উত্তর: (খ) দিগু
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: চৌ (চার) রাস্তার সমাহার। পূর্বপদ সংখ্যাবাচক (চার) এবং সমষ্টি বোঝাচ্ছে, তাই এটি দিগু সমাস।
প্রশ্ন ৫০। 'ছায়াশীতল' কোন সমাসের উদাহরণ?
(ক) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
(খ) অলুক তৎপুরুষ
(গ) পঞ্চমী তৎপুরুষ
(ঘ) তৃতীয়া তৎপুরুষ
সঠিক উত্তর: (ঘ) তৃতীয়া তৎপুরুষ
ব্যাখ্যা: এর ব্যাসবাক্য: ছায়া দ্বারা শীতল। এখানে তৃতীয়া বিভক্তি ('দ্বারা') লোপ পেয়েছে এবং উত্তরপদের (শীতল) অর্থের প্রাধান্য রয়েছে। এটি তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস।
আগের পোষ্ট গুলো দেখুন---
১.লাভ-ক্ষতির অংক।। বিস্তারিত সমাধান।। BCS, NTRCA, Bank সহ সকল পরীক্ষার শর্টকাট ট্রিকস ।।৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি সহ।।
২.প্রাচীন বাংলা ও উপমহাদেশে ক্ষমতার পালাবদল (৭০০-১২০৪ খ্রি.)বিস্তারিত (১০০ টি MCQ) সহ।
৩.সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বারবার আসা বাগধারাগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ (ক্রমিক ১০১ থেকে ২০০) বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ)।
